Saturday, August 23, 2014

কিসসা ইওনি কা- আঁধারের পথে আলো

কিসসা ইওনি কা- আঁধারের পথে আলো
রেশমী পাল
এনজিও 'স্নেহা' - 'পুওর বক্স প্রোডাকশন' এবং 'দ্য মেক অ্যা ডিফারেন্স ফাউন্ডেশন' এর যৌথ প্রচেষ্টায় মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক 'কিসসা ইওনি কা' । 'দ্য ভ্যাজাইনা মনোলোগাস' এর হিন্দী সংস্করণ 'কিসসা ইওনি কা' । নাটকটি আধুনিক এবং সাহসী নারীবাদের কথা বলে। নাটকটি মূলত আমেরিকান নাট্যকার ইভ এনস্লারের লেখা। মুম্বাই বস্তির ওপর ভিত্তি করেই এই নাটকটি লেখা হয়েছে। ৫ই অগাস্ট থেকে জুহুর পৃথ্বী থিয়েটার এবং চার্চগেটের জয় হিন্দ কলেজে অল্টারনেটিভলি ১০ বার মঞ্চস্থ হবে। ধারাভি, মানখুর্দ, কুরলা, চেম্বুর, ঘটকোপর, পরেল, থানের বস্তির মহিলারা নাটকের পর মঞ্চে আলোচনা সভায় যোগ দেবেন। প্রত্যেক শো এর শেষে ২০০ জন মহিলা যৌনতা, লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক আলোচনায় তাদের মতামত জানাবেন। ১০ টি শো তে মোট ২০০০ জন যোগ দেবে।

যৌনতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার দরুণ মহিলারা এই বিষয়ে কোনও কথা বলতে পারে না।এমনকি ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও তারা প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পায় না। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা মনে করছেন এই শো গুলি অনেকটাই উৎসাহ যোগাবে মহিলাদের। বিশেষত বস্তিতে থাকা পিছিয়ে পড়া মহিলাদের বেশ কিছুটা এগিয়ে দেবে।এই শোয়ের আলোচেনা সভায় যেসকল মহিলারা যোগ দেবেন তারা অনেকেই নারী নির্যাতনের শিকার। বাধ্য হয়ে 'স্নেহা'র সান্নিধ্যে আসতে হয়েছে তাদের। 'দ্য ভ্যাজাইনা মনোলোগাস' -এর প্রত্যেকটি শোয়ের শেষে দর্শকাসনে থাকা ছ'জনের স্যাক্ষাৎকার নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা প্রত্যেকেই নির্যাতিতা।

সমাজের চোখে ভ্যাজাইনা এবং পেনিস শব্দ যুগল নোংরা। অথচ এই দুই শব্দ চোখ,কান, নাকের মতোই আমাদের শরীরের অঙ্গ।তাই বাচ্চাদের সেক্স এডুকেশনের পাঠ রাখাটা ভীষণ ভাবে জরুরি।সমাজকে সচেতন করতে গেলে এটার থেকে আর কোনও সহজ উপায় হতে পারে না।এমনটাই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের।

'স্নেহা' ২০০১ সাল থেকে শিশু এবং মহিলাদের সঙ্গে হওয়া নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কাজে ব্রতী হয়েছে। তাদের লক্ষ্য নির্যাতিত ওই সব শিশু এবং মহিলাদের নিশ্চিত করা যে, তারা সুরক্ষা এবং ন্যায় বিচার পাবে, নারীরা তাদের ক্ষমতার জোড়ে নিজেদের অধিকার অর্জন করবে। প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার যে কৌশল, তার প্রভাব যাতে সমাজের ওপর পড়ে, প্রতিনিয়ত এমনটাই চেষ্টা চালাচ্ছে 'স্নেহা'। 'স্নেহা' তাদের কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার এবং সমাজের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির কাজকে। কারণ সমন্বয় সাধন হলে নির্যাতিত মহিলাদের ভদ্র সমাজে বাস করার এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে পারবে সরকার। এককথায় তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারবে।
'স্নেহা'-র এই উদ্যোগ অভিনব। তাদের এই নাটক মঞ্চস্থ করা, এই কার্যক্রম যদি সফল হয় তাহলে মুম্বাই এর বস্তিতে থাকা মহিলারা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করার শক্ত মাটি খুঁজে পাবে। একটু হলেও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। অন্ধকার জীবনে আলো খুঁজে পাবে।
নাটকটি আবার মঞ্চস্থ হবে ১০ সেপ্টেম্বর, ১ অক্টোবর এবং ৮ অক্টোবর জয় হিন্দ কলেজ, পৃথ্বী থিয়েটার এবং জয় হিন্দ কলেজে যথাক্রমে।